দায়িত্ব পালন করে থানায় ফিরে কিছুটা অসুস্থতা বোধ করছিলেন পুলিশের উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মো. সেলিম। দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামছিলেন নিচে। এর মধ্যে অসতর্কতাবশত নিজের পিস্তল থেকে বের হয়ে যায় গুলি। গুলির বিকট শব্দে জ্ঞান হারান সেলিম। বরিশালের কোতোয়ালি থানায় গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
ঘটনার সময় থানায় অবস্থানরত এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এএসআই সেলিম ডিউটি শেষ করে থানায় ফেরেন। এরপর তিনি থানার দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি বেয়ে নিচতলায় নামার সময় আকস্মিক গুলি ছোঁড়ার বিকট শব্দ শুনে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে মেঝেতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে অন্য পুলিশ সদস্যরা দৌড়ে গিয়ে সেলিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শারমিন সুলতানা বলেন, এএসআই সেলিম আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। এ জন্য তাঁকে ছুটি নিয়ে চিকিৎসা ও বিশ্রামের জন্য বলা হয়েছিল। দোতলার সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন। এ সময় যেকোনোভাবে তাঁর সঙ্গে থাকা পিস্তল থেকে গুলি বের হয়ে যায়। শব্দ পেয়ে সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এসি জানান, কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁর সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি (পিস্তল) লোড করা ছিল। মূলত অসতর্কতার কারণে সেটি থেকে মিস ফায়ার হয়েছে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম বলেন, ‘আমরা মনে করছি এটা মিসফায়ার। ওই পুলিশ সদস্য আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তিনি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এ জন্য অসুস্থ হয়ে পড়ে যাওয়ার সময় তাঁর কাছ থাকা পিস্তলটি পড়ে গিয়ে মিসফায়ার হয়েছে। এতে বিকট শব্দ হওয়ায় তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে কারও শরীরে কোনো গুলি লাগেনি।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম আজ রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এএসআই সেলিম বর্তমানে সুস্থ আছেন। মূলত উচ্চ রক্তচাপ আর বিকট শব্দে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটের (পুরুষ) রেজিস্ট্রার নাজমুল আহসান বলেছেন, এএসআই সেলিম ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।