ঢাকাই সিনেমার নায়কদের নিয়ে কথা বলতে গেলেই একজন নায়কের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠবেই। সেই মানুষটি আর কেউ নন, তিনি হলেন সালমান শাহ। নব্বই দশকের সবচেয়ে সুন্দর ও মেধাবী সেই চলচ্চিত্রশিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
১৯৯৬ সালের এইদিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। তাকে হারানো ২৩ বছর হয়ে গেল। চলচ্চিত্রের মানুষেরা বলেন, ‘আজও কেউ পূরণ করতে পারেননি সালমান শাহের শূন্যস্থান।’
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এবং ১৯৯৭ সালে ‘বুকের ভিতর আগুন’ ৪ বছরে ক্যারিয়ারে মাত্র ২৭টি সিনেমার নায়ক সালমান শাহ। এত কম সংখ্যক সিনেমায় অভিনয় করেও নব্বই দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়ক হয়ে উঠেছিলেন সালমান শাহ।
পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন হলেও সিনেমার পর্দায় তিনি ছিলেন শুধুই সালমান শাহ। ১৯৭১ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলায় অবস্থিত জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন সালমান। তার পিতা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মাতা নীলা চৌধুরী। তিনি ছিলেন পরিবারের বড় ছেলে।
ছোট বেলা থেকে অভিনয়ে আগ্রহী সালমান শাহ ১৯৮৫ সালে বিটিভির ‘আকাশ ছোঁয়া’ নাটক দিয়ে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন। এরপর বেশ কিছু নাটকে অভিনয়ও করেছেন সালমান। নাটকে কাজ শুরু করার ৭ বছর পর, নায়ক আলমগীরের সাবেক স্ত্রী খোশনুর আলমগীরের সন্ধানে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান সালমান শাহ।
সহপাঠী মৌসুমীর বিপরীতে অভিনয় করে নিজের প্রথম ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় সাড়া ফেলেন। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি সালমান শাহকে, চলচ্চিত্র জীবনে ছুঁয়ে গেছেন জনপ্রিয়তার সবটুকু আকাশ।
শাবনূরের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছেন ১৪টি সিনেমায়। উপহার দিয়েছেন বাংলা সিনেমার অন্যতম সেরা সময়।
তবে ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে মাত্র ২৪ বছর বয়সে ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর শুক্রবারের সকালে রহস্যজনক এক কারণে জীবন সংসারের ইতি টানেন সালমান শাহ। রাজধানী ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাস ভবনে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। ময়না তদন্ত রিপোর্টে আত্মহত্যা বলা হলেও তার মৃত্যু নিয়ে এখনো রহস্য কাটেনি।
তার স্ত্রী সামিরার দাবি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন সালমান শাহ। কিন্তু সালমানের পরিবারের দাবি তাকে খুন করা হয়েছিল। মৃত্যুর ২৩ বছর পরও এই রহস্যের জট না খুললেও মৃত্যুর এত বছর পরও সালমান শাহ আছেন ভক্তদের অন্তরে অন্তরে। আছেন ঢাকাই সিনেমার স্বপ্নের ঠিকানায়।