পাওনা টাকা চাওয়ায় পাঁচ বছর আগে ঢাকার আশুলিয়ার এক পোশাক কারখানার কর্মী মো. তানিমকে অপহরণ করে হত্যার দায়ে চারজনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত আরা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন— তানিমের সহকর্মী সোহেল রানা, ফরহাদ হোসেন, মো. আশিকুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম।
হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ সাজার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের।
এছাড়া অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে আরেক ধারায় সবাইকে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহত তানিমের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ভাগলপুরে। আশুলিয়ার মাকসুদা গারমেন্টস কারখানায় তিনি চাকরি করতেন।
২০১৭ সনের ২২ জুলাই সকালে নিখোঁজ হন তানিম, তিন দিন পর খাগান গ্রামের জঙ্গলে তার লাশ পায় পুলিশ।
প্রথমে বেওয়ারিশ লাশ হিসাবে পুলিশ সেটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলাও করা হয় তখন।
এদিকে তানিমকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী নূরুন্নাহার ১০ আগস্ট কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন তানিমের মা সাইদা সুলতানা।
সেখানে ‘মুক্তিপণের জন্য অপহরণের’ অভিযোগ আনা হয়। আদালত সেটি এজাহার হিসাবে গণ্য করার জন্য আশুলিয়া থানাকে নির্দেশ দেয়।
পরে তদন্তের সময় পুরো ঘটনা প্রকাশিত হয়। জানা যায়, সোহেলের কাছে ৪০ হাজার টাকা পাওনা ছিল তানিমের। সেই টাকা চাওয়ায় সোহেল ও তার সহযোগিতা তানিমকে অপহরণ করেন।
পরে তানিমের কণ্ঠ মোবাইল ফোনে ধারণ করে তার মাকে শুনিয়ে টাকা আদায় করেন। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, টাকা দিলে তিনি ছেলেকে ফেরত পাবেন।
এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর সোহেল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি তানিমকে হত্যার কারণ এবং হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া অন্যদের নাম বলে দেন।
পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য শুনে বিচারক এ রায় দিলেন।