আজ ভয়াল ২৫ মার্চ। বাঙালি জাতির জীবনে একটি কালরাতের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে এক ভয়াল বিভীষিকাময় রাত নেমে এসেছিল। একাত্তরের সেই গণহত্যা স্মরণে শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি পালন হয়েছে।
এই সময়টায় সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনায় কোনো আলোকসজ্জা করা যাবে না বলে আগেই জানিয়ে রেখেছিল সরকার। তবে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনাগুলো ব্ল্যাকআউটের আওতামুক্ত রাখা হয়।
শহীদ স্মরণে পাঁচ বছর ধরে এই আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গভবন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এই রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় যুক্ত হন। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতির সংগঠনও এতে অংশ নেয়।
তবে গত পাঁচ বছরের মতো এবারও দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি এই গণহত্যা দিবসের কোনো আয়োজন রাখেনি। তারা এক মিনিটের ব্ল্যাকআউটেও অংশ নেয়নি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সশস্ত্র আক্রমণ করে।
জাতীয় সংসদে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ এদিন অর্থাৎ ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। তখন থেকে দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টায় আছে সরকার।
বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
২৫ মার্চ দিবাগত রাতে সেনা আগ্রাসনের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।