ছাগল বেধে রাখতে বলায় হাতীবান্ধায় প্রতিবন্ধী নারীকে মারধর;

0 0
Read Time:5 Minute, 52 Second

হাতীবান্ধা লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ধান ক্ষেতে ছাগল নামতে নিষেধ করায় আবু তালেব নামে এক বর্গা চাষীকে মারধর করেন প্রভাবশালী নুর ইসলাম নুরু গংরা। তালেবকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার স্ত্রী সাহিদা বেগম ও একমাত্র বাক-প্রতিবন্ধী মেয়ে রেহেনাকে মারধর করেন তারা। মা-বাবা ও বোনকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা শিক্ষার্থী ছাইয়াকুলের মুখে অঘাত করে ৭টি দাঁত ভেঙ্গে দেয়। বর্তমানে গুরতর আহত ওই শিক্ষার্থী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে নুর ইসলাম নুরুকে প্রধান আসামী করে মোট ৬জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা আবু তালেব।
এর আগে শনিবার বিকেলে উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব বেজগ্রাম এলাকায় এই মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে।
আহতরা হলেন, উপজেলার পূর্ব বেজগ্রাম এলাকার বর্গাচাষী আবু তালেব, তার স্ত্রী সাহিদা বেগম, বাক-প্রতিবন্ধী মেয়ে রেহেনা ও ছেলে ছাইয়াকুল ইসলাম। ছাইয়াকুল ইসলাম এবার কেতকীবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার পূর্ব বেজগ্রাম এলাকার মৃত রমজান আলীর ছেলে নুর ইসলাম নুরু, নুর ইসলাম নুরুর স্ত্রী খাদিজা বেগম, আঃ ছামাদের স্ত্রী জরিমন বেগম, ছেলে, মায়ানুর, মোজাম ও মোজানুর।
জানাগেছে, আবু তাবেল একজন বর্গাচাষী। অন্যের জমি চাষ করেই চলে তার সংসার। প্রায় সময় অভিযুক্তদের ছাগল আবু তালেবের ফষলের ক্ষেত খেয়ে নষ্ট করে। এ নিয়ে অনেক বার নিষেধ করার পরেও তারা তা আমলে নেয়নি। এ দিকে গত শনিবার বিকেলে তালেবের ধানের গাছ খেয়ে ফেলেন জরিমনের একটি ছাগল। ছাগল বেধে রাখতে বলায় অভিযুক্তরা বাঁশের লাঠি, লোহার রড়, শালের গাইন, ধারালো ছোড়া ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তালাবের পরিবারের উপর হামলা করে। এতে বাঁধা দিলে অভিযুক্তরা আবু তালেব তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে মরধর করে। তাদের মারধরের কারণে ছাইয়াকুলকে মুখের ৭টি দাঁত ভেঙ্গে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
রবিবার সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ছেলে ছাইয়াকুলের জন্য পাগলের মত কান্না-কাটি করছেন তার মা সাহিদা বেগম আর তার সাথে কান্না করছেন বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে রেহেনা। কান্না করতে করতে একটু পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন মা সাহিদা বেগম। এ সময় কথা হলে কান্না করতে করতে সাহিদা বেগম বলেন, তারা আমার ছেলেকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতারি মারধর করে। এতে আমার ছেলের মুখের ৭টি দাঁত ভেঙ্গে গেছে। এলাকার মানুষজন তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে না আসলে হয়তো তাকে মেরেই ফেলতো। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
বর্গাচাষী আবু তালেব বলেন, তারা আমার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে মারধর করেছে তাই থানায় অভিয়োগ করেছি। তারা এমন কোন অপরাধ নাই করে না। এলাকার সবাই তা জানে। আপনারা এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে সব জানতে পারবেন।
এ সময় স্থানীয় নজরুল, আবু বক্কর, আব্দুল আজিজ ও শামসুল হকে সাথে কথা হলে তারা জানান, এরা খবু খারাপ মানুষ। সবার সাথে ঝামেলা করে। তারা মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। তাদের পুরো পরিবার বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মায়ানুর বলেন, আমরা তাদের কোন মারধর করি নাই। তারাই আমার মা-বাবাকে মারধর করেছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমরাও থানায় অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা (প.প) কর্মকর্তা নাঈম হাসান নয়ন বলেন, একজন দাঁত ভাঙ্গা রোগী এসেছিলো তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, দুই পক্ষেই লিখত অভিযোগ করেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *