করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কারণ, যারা টিকা নিয়েছেন, তারা করোনায় সংক্রমিত হলেও তাদের সংক্রমণের তীব্রতা কম বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও কোভিড ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এক ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান।
ভিডিও বার্তায় অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সম্প্রতি যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অথবা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই করোনার টিকা গ্রহণ করেননি। অপরদিকে, যারা টিকা নিয়েছেন, তারা সংক্রমিত হলেও তাদের সংক্রমণের তীব্রতা অনেক কম। সেইসঙ্গে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়নি।’
‘কোভিড ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন, সুরক্ষিত থাকুন’, বলেন অধ্যাপক ফ্লোরা।
প্রসঙ্গত, দেশে চলমান করোনা টিকাদান কর্মসূচির প্রথম ডোজ দেওয়া শেষ হচ্ছে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিন এক মেগা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এককোটি টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজের টিকা নিতে আগের মতো জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা মোবাইল ফোনে এসএমএসের দরকার হবে না। কেবলমাত্র মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকা নেওয়া যাবে।
এ বিষয়ে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কোভিড ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক জানিয়েছেন, মেগা ক্যাম্পেইনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সারা দেশের সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কম্প্লেক্সসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ডা. শামসুল হক বলেন, ‘২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজের শেষ দিন। সেদিনের জন্য একটি মেগা ক্যাম্পেইন নেওয়া হয়েছে, একদিনে এককোটি টিকা দেওয়ার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৬ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম আরও জোরদার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— সিভিল সার্জন অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সবাইকে। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মীদেরও সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তারা কাজ করছেন।’
বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনেকগুলো টিম ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজ করবে। যেন সেদিন সবার কাছে টিকা পৌঁছাতে পারি’, বলেন ডা. শামসুল হক।
তিনি জানান, সেদিন টার্গেট পূরণের জন্য কোনও রেজিস্ট্রেশন এবং জন্মনিবন্ধন কিছুই প্রয়োজন হবে না। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দেশের সব হাসপাতাল এবং টিকাকেন্দ্রগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— এখন থেকে প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার জন্য যদি কেউ আসেন, তার যদি রেজিস্ট্রেশন না থাকে, নিবন্ধন না থাকে, শুধু লাইন লিস্টিং করে, কেবল মোবাইল নম্বর দিয়ে তিনি টিকা নিতে পারবেন।
মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তাদের তথ্য নথিভুক্ত করে টিকা দেওয়া হবে। তাদের একটি করে কার্ড দেওয়া হবে, সেটিই হবে তার টিকা নেওয়ার প্রমাণ। এসব কিছুর প্রস্তুতি এবং নির্দেশনা ইতোমধ্যে দেশের সব সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে গেছে।