রবিবার রাতে অস্কারের ৯৪তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের মঞ্চে উইল স্মিথের স্ত্রী জাডা পিংকেট স্মিথের মাথার চুল নিয়ে কৌতুক করেন মার্কিন কমেডিয়ান ক্রিস রক।
জাডা পিংকেট ‘অ্যালোপেশিয়া’ নামে একটি রোগে আক্রান্ত। এই রোগের শিকার হলে মাথার চুল পড়ে যায়। জাডার ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে।
কিন্তু ক্রিস রক সেটা নিয়েই মজা করে বলেন, ‘জাডা আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ‘জি.আই জেন-২’ সিনেমার নায়িকা হিসেবে দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি’। ‘জি.আই জেন’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য অভিনেত্রী ডেমি মুরও তার মাথার চুল কামিয়েছিলেন।
স্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে অস্কারের মঞ্চে সঞ্চালক ক্রিস রক এমন রসিকতা করতেই মেজাজ হারান স্মিথ। মঞ্চে উঠে ক্রিস রককে থাপ্পড় মারেন উইল স্মিথ। এটি গতকাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।
কেউ কেউ উইল স্মিথের এই প্রতিক্রিয়াকে ক্ষমার চোখে দেখেছেন। বলেছেন যে, তিনি কেবল ‘তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষা করেছেন’। কিন্তু এই কথাটিই অনেকের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে।
আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই এই বিষয়ে একমত হবেন যে, শারীরিক সহিংসতা ছাড়াই আপনি যাকে ভালোবাসেন তার পক্ষে দাঁড়ানোর অন্য উপায় রয়েছে। কিন্তু তাতেও প্রশ্ন উঠতে পারে যে, ‘নারীদের সম্মান রক্ষা’র জন্য কি এখনও একজন পুরুষকেই দরকার?
দ্য গার্ডিয়ানের কলামিস্ট র্যাচেল মস স্যোশাল মিডিয়ায় নানা জনের মন্তব্যের উদাহরণ টেনে এই প্রশ্ন তুলেছেন। স্যোশাল মিডিয়ায় অনেক নারীও উইল স্মিথের এই কাজের সমালোচনা করছেন।
তবে, অনেকেই স্ত্রীর ‘সম্মান রক্ষা’ করার জন্য অভিনেতা উইল স্মিথের কাণ্ডের প্রশংসা করেছেন।
কিন্তু অন্যরা বলছেন যে, জাডা পিঙ্কেট স্মিথ একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী এবং তিনি নিজেই নিজের সম্মান রক্ষা করতে পুরোপুরি সক্ষম।
ভেনাস এবং সেরেনা উইলিয়ামসের বাবা রিচার্ড উইলিয়ামস এর জীবনী ভিত্তিক সিনেমায় অভিনয়ের জন্য উইল স্মিথ এবার সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন।
পুরস্কার গ্রহণের সময় বক্তৃতায় উইল স্মিথ তার আচরণের জন্য অস্কার একাডেমি এবং তার মনোনীত সহকর্মীদের কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘আমি পাগল বাবার মতো দেখতে, ঠিক যেমন তারা রিচার্ড উইলিয়ামস সম্পর্কেও বলেছিল। কিন্তু ভালোবাসা তোমাকে পাগল করে দেবে’। কিন্তু তার এই কথাগুলো আরও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনেকেই বলছেন যে, উভয় পুরুষই এই দৃশ্যে ভুল ছিলেন। উভয়ই বিষাক্ত পৌরুষ দেখিয়েছেন।
কিন্তু একটা জিনিস স্পষ্ট, এই ঘটনা নিয়ে সংবাদের শিরোনামগুলো সবই ক্রিস রক এবং উইল স্মিথকে কেন্দ্র করেই। এই গল্পের কেন্দ্রস্থলে থাকা নারী জাডা পিঙ্কেট স্মিথ এর নাম কোথাও নেই!