শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আগামী ২৮ মার্চ বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা হরতালের সমর্থনে এক সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, “সরকার টিসিবির ট্রাকের পেছনে যেভাবে নাগরিকদের ছুটিয়েছে, তাদেরকে প্রায় ভিক্ষুকের জায়গায় নিয়ে গেছে। এই সরকার জনগণের প্রতি অপমানজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, এর সমীচীন জবাব দিতে হবে।”
আন্দোলনের কারণে সরকার টিসিবির পণ্য বিক্রিতে কার্ড বিতরণ করলেও তাতে ‘দলীয়করণ’ করা হয়েছে বলে সভায় অভিযোগ করে গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা।
তিনি বলেন, “শুধুমাত্র সাময়িক সময়ের জন্য এই ব্যবস্থা রাখলে চলবে না। স্থায়ীভাবে গণ রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষ যাতে আয়ের সাথে সংগতিপূর্ণ দামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পান, সেই দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।”
দেশে আড়াই কোটি পরিবারের ১০ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে অথবা কাছাকাছি আছে দাবি করে তাদের সবার জন্য তিনি গণ রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
“ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবির বিক্রয় কেন্দ্র খুলতে হবে। আজকে মধ্যবিত্তরাও টিসিবির লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।”
নিত্যপণ্যের দামে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থার মধ্যে সরকার গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে দাবি করে সাকি বলেন, “গণশুনানি হচ্ছে, কিন্তু কোনো তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে পারেনি যে গ্যাসের দাম বাড়ানো যৌক্তিক।
“কিন্তু আমরা জানি এখন পরিস্থিতি… চারদিকে আন্দোলন, সরকার হয়তো পিছিয়ে যাবে, কিন্তু সুযোগ মতো তারা আবার গ্যাস-পানির দাম বাড়িয়ে দেবে।”
গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, “দেশের সমস্ত প্রকল্পে অবিশ্বাস্য লুটপাট চলছে। প্রত্যকটি প্রকল্পে জবাবদিহিতাহীন-লাগামহীন ব্যয় বেড়েই চলেছে। কেউ দেখার নেই।
“এ সমস্ত প্রকল্পে টাকা যোগান দেওয়ার জন্য এই সরকার জনগণের পকেট কাটছে। লাগামহীনভাবে বাজারে সমস্ত দ্রব্যমূল্যে বাড়িয়ে দিচ্ছে। দাম ঊর্ধ্বগতিতে যাচ্ছে, লাগাম টেনে ধরার কোনো জায়গা নেই।”
নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আগামী ২৮ মার্চ সারাদেশে আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ জোটের শরিক দল গণসংহতি আন্দোলন।
২৮ মার্চ জনগণের হরতাল পালিত হবে মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, “এই হরতাল পালনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে যে, এই সরকারের পেছনে কোনো জনসমর্থন নেই।
“অবিলম্বে ক্ষমতা ছাড়ুন। যারা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, যারা দুর্নীতির ওপরে দাঁড়িয়ে থাকে, যারা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।”
‘গণপ্রতিরোধে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার সিন্ডিকেট ভাঙো’ ব্যানারে এই সমাবেশ শেষে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং হরতালের সমর্থনে শাহবাগ এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।