রোহিঙ্গাদের জন্য এক হাজার ৩২২ কোটি টাকা সহায়তা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

0 0
Read Time:5 Minute, 12 Second

কক্সবাজারে প্রথম সফরের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সেখানে থাকা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য প্রায় এক হাজার ৩২২ কোটি টাকার নতুন মানবিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, এর মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত আমরা ১.৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা) প্রদান করেছি। নতুন দেওয়া তহবিলের মধ্যে ১২৫ মিলিয়ন ডলার (এক হাজার ৮৭ কোটি টাকা) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহীত কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে।

 

রাষ্ট্রদূত হাস গত ২৭-২৯ মার্চ কক্সবাজার সফরকালে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসূচিগুলো কীভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা, শিবিরগুলোতে অগ্নি নির্বাপন প্রশিক্ষণ, পরিবেশের সুরক্ষা, জলবায়ুর দুর্যোগ মোকাবেলায় অভিঘাতসহনশীলতা তৈরি এবং নিরাপদ খাদ্য বিতরণে অব্যাহতভাবে সহায়তা করছে তা সরেজমিনে দেখেন।

রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, কক্সবাজারের শিবিরগুলো ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে কর্মরত মানবিক সংস্থাগুলোর মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত ২১ মার্চ বার্মিজ সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে ঘোষণার পর দেশটির রাষ্ট্রদূতের এটাই প্রথম কক্সবাজার সফর।

রাষ্ট্রদূত হাস কক্সবাজার সফরকালে শরণার্থীদের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত এবং জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নিয়মিত কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য প্রশংসা করেন। বিশেষ করে শিক্ষাকেন্দ্রগুলো আবার খুলে দেওয়ায় রোহিঙ্গাদের একটি প্রজন্মের লেখাপড়া নিশ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত হাস ইউএনএইচসিআর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন, যা স্থানীয় পরিবেশের পুনরুজ্জীবন, জলপথের দূষণ প্রতিরোধ ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ভূমিধস, বন্যা ও আগুন লাগা থেকে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি সহিষ্ণুতা তথা অভিঘাতসহনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করছে।

এই কর্মসূচিতে প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেমন- পাহাড়ের পাড়গুলো স্থিতিশীল করতে গাছ লাগানো, পানির গুণাগুণ মান ব্যবস্থাপনা এবং জলাধার স্থাপন।

এছাড়াও রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধিদল ইউএসএআইডি ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্থায়নে পরিচালিত জরুরি খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাসিক ই-ভাউচার প্রদান ও সেই ই-ভাউচার ব্যবহার করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মালিকানাধীন ২১টি দোকান বা আউটলেট থেকে ডিম, শাকসবজি ও ফলমূলসহ মৌলিক খাদ্যসামগ্রী কেনার বিষয়গুলো পরিদর্শন করেন।

প্রসঙ্গত, শুধু ২০২১ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির জন্য ৩০২ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা খরচ করেছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *