সেই তিন প্রতিষ্ঠানে চাকরির অভিযুক্ত সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

0 0
Read Time:6 Minute, 6 Second

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাযিল (ডিগ্রী ) মাদ্রাসার এক জন শিক্ষক একাই তিনটি পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি একই সাথে একাদিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা সহ আইন পেশায় ও নিয়োজিত রয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. মনির হোসেন এবং তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের বাংলা প্রভাষক তাঁর (ইনডেক্স নং ৩১৮৭৩৭)।

বিষয়টি নিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন বাংলাদেশ দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)’র কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। দুদক অভিযোগটি আমলে নিয়ে গত ১৩.০৫.২০১৯ইং তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন ০০.০১.০০০০.৫০৩.২৬.০৮০.১৯.১৯১৫৮ স্মারক নং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয় টি সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ দেন। বাংলাদেশ মাদ্রাসা অধিদপ্তর গত ২৫ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে ৫৭.২৫.০০০০.০১০.১০.০০২.১৯.২৪৫ স্মারক নাম্বারের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে উক্ত অভিযোগের বিয়য়ে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে মনোনিত করা হয়। সেই সাথে ২০.০৮.১৯ইং তারিখের মধ্যে এ অধিদপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক মনির হোসেন বাংলাপ্রেসকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে আমাকে একটি নোটিশ করা হলে আমি গত ২৫.০৮.১৯ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে হাজির হয়। কিন্তু অভিযোগের কোন কপি আমি পাইনি।

জানতে চাইলে খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ হুমায়ুন কবির বিষয় টি স্বীকার করে বলেন আমি এবিষয়ে একটি চিঠি পেয়ে আমি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে উপস্থিত হই। কিন্তু অভিযোগের কোন কপি না থাকায় ইউএনও মহোদয় মাদ্রাসা অধিদপ্তর কে অভিযোগের সংযুক্ত কপি প্রেরণেরও জন্য বলেন। বিষয় টি মুঠোফোনে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি মিটিং এ আছি বিষয় টি নিয়ে আমি পরে কথা বলবো। উল্লেখ্য, বিষয় টি নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রচার হয়। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. মনির হোসেন এবং তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের বাংলা প্রভাষক তাঁর (ইনডেক্স নং ৩১৮৭৩৭)। তিনি পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত লক্ষ্মীপুর টির্চাচ ট্রেনিং কলেজেরও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মো. মনির হোসেন ইতোপুর্বে লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন। কিন্তু একই সাথে তিনি একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় তিনি তাঁর আইনজীবী তালিকাভূক্তি সনদ লক্ষ্মীপুর বার থেকে পরিবর্তন করে বিগত ১৮.১০.২০১০ইং তারিখে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতিতে সংযুক্ত করেন (BBE/SEC-০২/Lakshmipur-২০৯/২০১০/২০৮৪) সে মোতাবেক তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির একজন নিয়মিত সদস্য হিসেবে ঢাকায় আইন পেশায়ও কর্মরত রয়েছেন। তার ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য নং ১৩৫৫৫। যাহা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি বিধি বহির্ভূত এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ ২০০৬ এর ৭ (ট) বিধির সরাসরি লংঘন।

মাদ্রাসার অবিভাভকগন জানায়, বাংলা প্রভাষক নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না। তিনি প্রায় মাদ্রাসায় অনুপস্তিত থাকায় ২০১৮ ইং সনে অনুষ্ঠিত আলিম পরিক্ষায় শুধু মাত্র বাংলা বিষয়ে ২৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য্য হয়। তিনি লক্ষ্মীপুর বি এড কলেজে অধ্যক্ষ পদে থাকলেও সেখানেও তিনি নিয়মিত উপস্তিত থাকেন না। যার কারনে শিক্ষার্থীরা বি এড প্রশিক্ষণে ভর্তি হয়েও কাংক্ষিত ফলাফল পাচ্ছে না বলে জানা গেছে। যার ফলে ২০১৮ সালের আলিম পরিক্ষায় অংশগ্রহন করে মাদ্রাসার ২৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয় যার কারনে মাদ্রাসার সুনাম চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়। এছাড়াও তিনি ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও লক্ষ্মীপুর টির্চাচ ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ বলে জানান । এবিষয়ে অভিযুক্ত মনির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে খিলবাইছা রাহমানিয়া ফাযিল মাদ্রাসায় ও লক্ষ্মীপুর টির্চাচ ট্রেনিং কলেজে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %