হারিয়ে যেতে বসেছে নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী অষ্টক গান

0 0
Read Time:4 Minute, 21 Second

জেলার বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অষ্ট সখীসহযোগে গান লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঘরানা হলো অষ্টকগান। সাধারণত চৈত্র মাসের শেষ দিকে চৈত্র সংক্রান্তিকে সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে হাটবাজারে এ গান পরিবেশিত হয়ে থাকে। তবে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অষ্টক গান।


জানাগেছে, নড়াইলের রাধা-কৃষ্ণ, শিব-দুর্গা, রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনি ছাড়াও পণপ্রথা, সাম্প্রদায়িক প্রসঙ্গ, কৃষি সমস্যা, বৃক্ষ রোপণ, সমাজের অসঙ্গতি বা শিক্ষামূলক বিষয় প্রভৃতি অষ্টকগানের বিষয়বস্তু। অষ্ট সখীসহযোগে এ গান পরিবেশিত হয় বলে একে অষ্টক গান বলা হয়েছে। এটি একটি গোষ্ঠীবদ্ধ নৃত্যসহ সাঙ্গীতিক পরিবেশনা। সামনে অষ্ট সখী এবং পেছনে হারমোনিয়াম, বেহালা, বাঁশি, কাসি, কর্তালসহযোগে এ গান পরিবেশিত হয়। অষ্টক গান বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অংশ। নড়াইল সদরের বাহিরডাঙ্গা গ্রামের প্রয়াত স্বভাবকবি বিপিন সরকার অসংখ্য অষ্টকগান ও অষ্টক যাত্রাপালা লিখেছেন এবং সুর করেছিলেন।


প্রবীন ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, যুগ যুগ ধরে নড়াইল পৌর এলাকার বাহিরডাঙ্গা, দুর্গাপুর, বাঁশভিটা, মুলিয়া, এগারখানসহ বিভিন্ন এলাকার নমঃশুদ্র সম্প্রদায় লোকসংস্কৃতির এ ঘরানাকে লালন করে আসছে।
অষ্টকগানের দলের সাথে কথা বলে জানাগেছে, শহরের বিভিন্নস্থানে আমাদের মত অনেক দল অষ্টকগান পরিবেশ করত এক সময়। এখন আর আগের মত অষ্টক গানের দল নেই। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অষ্টক গান। বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অষ্টকগান পরিবেশন করেন এসময় বাসা-বাড়িক মালিক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই গানের দলকে খুশি মনে অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে। এ অর্থ দিয়ে পূজা পর্বন করা হয় বলে তারা জানান।


অষ্টক গানের শিল্পী রবিন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, চৈত্রমাস যাওয়ার শেষের দিকে আমাদের দল প্রতিবছরই এগান পরিবশেস করে থাকে।


স্মৃতি বিশ^াস বলেন, দশবছর আগেও নড়াইলে অনেকগুলো দল ছিল যারা অষ্টকগান পরিবশে করত। এখন হাতে গোনা কয়েকটি দল বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও বাজারে অষ্টক গান পরিবেশন করে থাকে।
বাহিরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সহকারী অধ্যাপক গোলকচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘মুরুব্বিদের কাছে শুনেছি, নড়াইল অঞ্চল থেকেই অষ্টকগানের সৃষ্টি এর ধারাবাহিকতা এখনও বহমান রয়েছে। এটি নড়াইলের একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন সাংস্কৃতি।


নড়াইল মূর্ছনা সংগীত নিকেতনের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শামীমূল ইসলাম টুলু বলেন, দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ অষ্টক গান। আমাদের আগামী প্রজন্মকে ঐতিহ্যবাহী এ অষ্টক গানের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং অষ্টকগানকে ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *