দেশের ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের পরীক্ষামূলকভাবে করোনার টিকা প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। এ মাসের শেষে দেশব্যাপী এ বয়সী শিশুদের করোনার টিকা দেওয়া হবে। আজ পরীক্ষামূলক টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় জাহিদ মালেক বলেন, আজ ১৫ থেকে ২০টি শিশুকে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেওয়া হচ্ছে। ২৫ আগস্ট থেকে দেশব্যাপী এ বয়সী শিশুদের করোনার টিকা দেওয়া হবে। প্রথমে সিটি করপোরেশনগুলোতে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা সারা দেশে কার্যকর করা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি বলেন, ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থীকে করোনার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। আর এই বয়সী শিক্ষার্থীদের ৮৩ শতাংশ পেয়েছে টিকার দ্বিতীয় ডোজ।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী দুজনই করোনা মহামারিতে পাশে থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
করোনা প্রতিরোধে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের বিশেষ টিকা দেশে আসে গত ৩০ জুলাই। ওই দিন বিশেষভাবে তৈরি ফাইজারের ১৫ লাখ ২ হাজার ৪০০ ডোজ টিকা এসেছে। সরকার গত এপ্রিল মাসেই ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দেশে এই বয়সী শিশুদের অনুমিত সংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষে এ মাসের শেষ সপ্তাহে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে পূর্ণাঙ্গভাবে শিশুদের টিকা দেওয়ার কাজ চলবে। পরে পর্যায়ক্রমে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও টিকা প্রয়োগ করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা প্রয়োগ কমিটির সদস্যসচিব শামসুল হক আজ বর্তমান কাগজকে বলেন, ‘আমাদের হাতে এখন ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ৩০ লাখ টিকা আছে। আশা করছি এ মাসের শেষে এক কোটি ডোজ টিকা চলে আসবে।’
এখন পর্যন্ত দেশে ২০ লাখ ৭ হাজার ১১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩০৭ জন। এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২৯ হাজার ৩০৪ জন। বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনার সংক্রমণের চিত্র কয়েক দফা ওঠানামা করতে দেখা গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া শুরু করে। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রে প্রতিদিন টিকা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও ১২ বছরের বেশি বয়সী ৩৩ লাখ মানুষ এখনো প্রথম ডোজ টিকা নেননি। এ ছাড়া প্রথম ডোজ পাওয়া ৯৪ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেননি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশে জনসংখ্যার ৭৬ শতাংশ করোনার টিকার প্রথম ডোজ এবং ৭১ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে। আর ২৩ শতাংশ পেয়েছে বুস্টার ডোজ।